কাঁকড়া বিছের বিষের মূল্য শত কোটি টাকা

কেনো কাকড়া বিছের বিষ এতো দামী?

কাকড়া বিছে


মরুভূমিসহ রুক্ষ্য অঞ্চলের অত্যন্ত বিষাক্ত প্রানী কাকঁড়া বিছে। দেখতে যতটা ভয়ঙ্গকর ঠিক তার চেয়ে বেশি বিষাক্ত এই ছোট প্রানীটি। কাকড়া বিছের একটা কামড় যেকোন প্রানীকে নিমেষেই হত্যা করতে সক্ষম। একটি কাকড়া বিছে যদি কোন মানুষকে কামড়ায় তবে তার বেথা ১টি মৈমাছির চেয়ে ১০০ গুন বেশি।

বিষধর সাপের সাথে এদের বিষের মিল খুজে পাওয়া গেলেও এরা মাকড়শা প্রজাতির প্রানী। মাকড়শার মত এদেরও ৮টি পা রয়েছে। কাকড়া বিছে নিশাচর প্রানী। দিনের বেলা বিশ্রাম নেয় ও রাতে শিকারে বের হয়। সাধারনত ছোট ছোট প্রাণী ও কীটপতঙ্গ এদের প্রধান খাদ্য।


আরও পড়ুনঃ কাকড়া বিছের বাচ্চারা মা-কে খেয়ে ফেলে কেনো?


কিন্তু অবাক  করা তথ্য হচ্ছে সাপের বিষের চেয়ে অনেক দামী হচ্ছে কাকঁড়া বিছের বিষ। শুধু তাই নয় পৃথিবীর সবচেয়ে দামী বিষ হচ্ছে কাকঁড়া বিছের। কাকঁড়া বিছের এক লিটার বিষের দাম ১ কোটি ডলারেরও বেশি। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় একশত কোটি টাকা। মূলত এর বিষ খুবই দুষ্কর আর তাই এর দাম এতো বেশি। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ঔষধ তৈরি সহ নানা কাজে ব্যবহৃত হয় এই বিষ। একটি কাকঁড়া বিছে সারাজীবনে মাত্র ৫ গ্রাম বিষ উৎপন্ন করতে পারে। 

একটি কাকঁড়া বিছে থেকে দিনে সর্বোচ্চ ২ মিলিগ্রামে বিষ সংগ্রহ করা সম্ভব।  মাত্র ১ গ্রাম বিষ সংগ্রহের জন্য দরকার হয় চার শতেরও বেশি কাকঁড়া বিছে। সারা বিশ্বের মাত্র গুটি কয়েক খামারের দেখা মিলবে। বিশেষ প্রকৃয়ায় সংগ্রহ করা হয় কাকঁড়া বিছের বিষ। বিষ সংগ্রহ করার সময় কামড় থেকে বাচতে নেয়া হয় সর্বোচ্চ সতর্কতা। একফোটা বিষের জন্য অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ সময়। বিষ সংগ্রহের প্রকৃয়াকে বলা হয় মিল্কিং বা দোহন।

ফ্রান্স ব্রিটেন জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডের মত দেশগুলু আমদানি করে কাকঁড়া বিছের এই বিষ। মূলত কসমেটিকস, পেইন কিলার ও বিভিন্ন এন্টিবায়োটিক তৈরিতে ব্যবহৃত হয় কাকঁড়া বিছের বিষ। কিউবায় যে নীল কাকড়া বিছে পাওয়া যায় তার মূল্য প্রায় ৫৭ কোটি টাকা। এই বিছের বিষ থেকে ভিটাটক্স নামের এক ঔষধ বানানো হয় যা কিউবায় ক্যান্সার রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।


একটি কাকঁড়া বিছের বিষে ৫০ ধরনের যৌগ রয়েছে। কিছু যৌগ দিয়ে এন্টিবায়োটিক, পেইন কিলার ও কসমেটিকস তৈরি করলেও অধিকাংশ যৌগ সম্পর্কে এখনও জানা যায়নি। গবেষকরা এসব যৌগ নিয়ে নিরন্তর গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের ধারনা কাকঁড়া বিছের এসব যৌগ দিয়ে জীবন রক্ষাকারী এন্টিভেনম বানানো সম্ভব।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন