বাংলাদশী নয় সম্পূর্ন নতুন এক প্রজাতীর সাপের দেখা মিললো কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীতে। এর এই সাপের ভয়ে আতঙ্কিত পদ্মাসহ কুষ্টিয়ার নদীপাড়ের মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায় বন্যার পানি বাড়ার পর পরই পদ্মা নদীতে দেখা যাচ্ছে রাসেল (Russell's Viper) ভাইপার নামে নতুন প্রজাতীর এ সাপ। কখনও জেলেদের জালে ধরা পরছে কখন নদী তীরে আবার কখনও ঢুকে পরছে নদী তীরবর্তী বাড়িতে। অত্যন্ত বিষাক্ত প্রজাতীর এই সাপ কোথা থেকে এসেছে তা নিশ্চিত বলা বলা যাচ্ছে না।
অন্যান্য বিষাক্ত সাপের থাকে নিওরো-টক্সিন বিষ। আর রাসেল ভাইপারের আছে হিমো-টক্সিন। এই হিমো-টক্সিন বিষ মানুষেত শরীরে বিষ ছড়ানোর সাথে সাথে মাংসে পচন ধরিয়ে দেয়। একটি রাসেল ভাইপার কাওকে কামড়ালে শরীরে রক্ত জমায় বাধে। যে জায়গায় কামড়ানো হয়েছে সেই জায়গার মাংস পচন ধরতে শুরু করে। রাসেল ভাইপারের (Russell's Viper) কামড়ে মানুষের মৃত্য পর্যন্ত হতে পারে। তবে ডাক্তারের মতে এর এন্টিভেনমও আছে সময় মত চিকিৎসা নিলে রাসেল ভাইপারে (Russell's Viper) কামড়ে রোগী সুস্থ হয় স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে পারে।
নতুন প্রজাতীর এই সাপ কোথা থেকে এসেছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অনেকটা অজগর সাপের নত দেখতে। প্রায় ৪ ফুট ওজনের এ রাসেল ভাইপার দেখতে অনেকটা অজগর সাপের মত। অন্যান্য বিষধর সাপের স্বভাব ও রাসেল ভাইপারের স্বভাবে রয়েছে বিস্তর ফারাক। প্রায় সকল প্রজাতীর সাপই মানুষকে ভয় পায় বা ভয়ানক পরিস্থিতিতে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে পিছু হটে যায়। এই স্বভাবের দিক থেকে রাসেল ভাইবার একেবারেই ব্যতিক্রম। এরা পিছু হিটে না বরং অগ্রসর হয়ে আক্রমন করে। পৃথিবীতে যত মানুষ সাপের কামড়ে মারা যায় এর অধিকাংশই মারা যায় রাসেল ভাইপারের কামড়ে।
বাংলাদেশ ও ভারতে রাসেল (Russell's Viper) ভাইপার এক বিলুপ্ত প্রজাতির সাপ। পূর্বে শুধু মাত্র রাজশাহীতে রাসেল ভাইপার দেখা গেলেও বর্তমানে নদী তীরবর্তী অঞ্চলগুলুতে এই সাপের দেখা মিলছে। স্থানীর মানুষ ও গিবেষকরা ধারনা করছেন ভারত থেকে বন্যার পানিতে ভেসে রাসেল ভাইপার (Russell's Viper) বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশ বন বিভাগ এই সাপের সংরক্ষন ওও রক্ষনাবেক্ষনের এখনও কোন পদক্ষেপ নেয়নি। বাংলাদেশ বন্য প্রানী সংরক্ষন ও নিরাপত্তা আইনে বলা হয়েছে, এমন কোন বিষাক্ত সাপ পাওয়া গেলে সেটাকে সংরক্ষিত এলাকায় নিয়ে যেতে হবে। তবে যেহেতু রাসেল ভাইপায় খুবই বিষাক্ত তাই এদের খোলা নদীতে ছেড়ে দেয়াকে মোটেও নিরাপদ মনে করছেন না সংশ্লিষ্টরা।
রাসেল ভাইপার মূলত ছোট ছোট ইদুর, টিকটিকিসহ এ প্রজাতির প্রাণী। ভয়ঙ্কর বেপার হচ্ছে রাসেল ভাইপারের শিকার করার ধরন অন্যান্য প্রজাতির সাপের চেয়ে সম্পূর্ন আলাদা। অন্য প্রজতির সাপ তাদের শিকারকে কামড় দিয়ে পেচিয়ে ধরে এবং মরে গেলে খেয়ে ফেলে। কিন্তু রাসেল ভাইপার সেটা করে না। প্রথমে সে তার শিকারকে কামড় দিয়ে ছেড়ে দেয়। স্বভাবতই আহত শিকার নিজের প্রান বাচাতে তার বাসার দিকে যাবে। রাসেল ভাইলার আহত তার শিকারের পিছু নেয় এবং সাবা পর্যন্ত গিয়ে সবাইকে নিজের শিকার বানায়। অন্যান্য সাপ ডিম পেড়ে বাচ্চা ফুটায়। কিন্তু রাসেল ভাইপার সরাসরি বাচ্চা প্রসব করে। একটি পরিপক্ক মা ভাইপার এক সাথে ৩০-৪০টি বাচ্চা প্রসব করে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন