সূর্যের আলো যদি পৃথিবীতে না আসে তাহলে পৃথিবীতে প্রানের অস্তিত্ব অচিরেই বিলীন হয়ে যাবে। সুর্য্য থেকে পৃথিবীতে আলো পৌছতে ৮ মিনিট ২০ সেকেন্ড সময় লাগে। এই সাধারন তথ্যটি আমাদের সকলের জানা। অর্থাৎ আমরা সূর্য্যের ৮ মিনিট ২০ সেকেন্ড পরের অবস্থা দেখছি। তবে সূর্য্য থেকে যে আলো পৃথিবীতে আসছে তা সৃষ্টি হয়েছে কয়েক কোটি বছর আছে। অর্থাৎ ৮ মিনিট ২০ সেকেন্ড পরে যে আলো আমরা দেখতে পাই তা ১ লক্ষ ৭০ হাজার বছর তৈরি হয়েছে।
যাইহোক, এসব কথা আমাদের জানা থাকলেও অনেকেরই হয়তো এই বিষয়টা অজানা যে সূর্য্যের আলো কীভাবে তৈরি হয়। সূর্য্যের কেন্দ্রে প্রতি সেকেন্ডে কোটি কোটি হাইড্রোজেন বিস্ফোরণ ঘটে দুইটি হাইডোজেন পরমানু একসাথে হয়ে হিলিয়ামে রুপান্তরিত হচ্ছে। আলো বা ফোটন হলো এই আলো। সূর্যের কেন্দ্রে ঘটা এই বিস্ফোরণের কারনে প্রসারিত হতে চায়। কিন্তু গ্রাভিটির ফলে সংকুচিত হয়ে যায়।
এই পুশ-পুলের কারনে সূর্যের আলো সূর্য থেকে বের হওয়াকে অনেক কঠিন কর তোলে। সূর্যের কেদ্রে সংঘটিত প্রতিটি নিউক্লিয়ার রিয়েকশন থেকে গামা-রে আকারে প্রচুর শক্তি নির্গত হয়। এই উৎপন্ন গামা-রে যেকোন এক দিকে ছুটতে শুরু করে। কিন্তু সূর্যের অভন্তরে থাকা বিভিন্ন পার্টিকেলের দ্বারা বাধা প্রাপ্ত হয়। এক পার্টিক্যাল থেকে অন্য পার্টিক্যালে বাধা পাওয়া বিষয়টি রেনডমলি ঘটতে থাকে। যাকে বলা হয় ফোটনের Random Walk।
বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন পরিক্ষার মাধ্যমে হিসেব করে দেখেন গামা-রে উৎপন্ন হওয়ার পর ১ লক্ষ ৭০ হাজার বছর Random Walk করে। এই Random Walk এর ফলে ধীরে ধীরে ফোটন শক্তি হারাতে থাকে। এভাবে গামা-রে থেকে এক্স-রে, তারপর আল্ট্রা-ভায়োলেট রশ্মি এবং সব শেষ ভিসুয়াল লাইটে রুপান্তিত হয়ে সূর্য থেকে বের হয়। এখন যেহেতু ফোটন আলোর গতীতে ট্রাভেল করে তাই ফোটনের হিসেবে সে বিস্ফোরণের পরপরই পৃথিবীতে চলে আসে। কারন কোন বস্তু আলোর গতিতে ট্রাভেল করলে সময় তার জন্য স্থির হয়ে যায়। আপনারা যদি মার্ভেল ষ্টুডিওর Flash মুভি দেখে থাকেন তাহলে সেখানে দেখবেন মূল চরিত্রে অভিনয় করা Ezra Miller যখন আলোর গতিতে Travel করে তখন সব কিছু স্থির হয়ে যায়।
সুতরাং, দৃশ্যমান সূর্য্যের আলো কখন তৈরি হয়েছে তার উত্তর দুটি, ফোটনের সাপেক্ষে আলোর বয়স শূন্য, আর আমাদের সাপেক্ষে সূর্য্যের আলোর বয়স ১ লক্ষ ৭০ হাজার বয়স
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন